আইনের উৎস কয়টি – What are the sources of law?

  এই আইন আসে কোথা থেকে? এর উৎস কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করতে হয়।

আইনের উৎস বলতে আমরা এমন সব সূত্রকে বুঝি যেখান থেকে আইন সৃষ্টি হয়

বা যেখান থেকে আইনের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সাধারণভাবে আইনের উৎসকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

• রাজনৈতিক উৎস: রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের মাধ্যমে আইন তৈরি করা।
• সামাজিক উৎস: সমাজের চাহিদা, নীতি, মূল্যবোধ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে আইন তৈরি করা।
• সংবিধান: কোনো দেশের সংবিধান সর্বোচ্চ আইন।
• এতে রাষ্ট্রের মূল নীতি, নাগরিকদের অধিকার, রাষ্ট্রের ক্ষমতার বিভাজন ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ থাকে।
• উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ইত্যাদি মূলনীতি উল্লেখ করা আছে।
• কানুন: সংসদ বা বিধানসভা দ্বারা প্রণীত আইনকে কানুন বলা হয়। এগুলো সংবিধানের সঙ্গতি রেখে তৈরি হয় এবং বিভিন্ন বিষয়ে নাগরিকদের আচরণ নির্ধারণ করে। উদাহরণস্বরূপ, ফৌজদারি আইন, সিভিল আইন, ভূমি আইন ইত্যাদি।
• উপ-কানুন: কানুনের বিভিন্ন বিষয়কে আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য সরকারি আদেশ, বিধিমালা ইত্যাদি জারি করা হয়।
• বিচার বিভাগের রায়: উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা যেসব মামলায় রায় দেন, সেগুলো আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বিশেষ করে কোনো আইনের ব্যাখ্যা বা প্রয়োগ নিয়ে বিরোধের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের রায় অন্যান্য আদালতের জন্য নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায়।
• চিরাচরিত প্রথা: সমাজে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত আচার-অনুষ্ঠান, রীতি-নীতি ইত্যাদি আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। উদাহরণস্বরূপ, পারিবারিক আইনে অনেক ক্ষেত্রে চিরাচরিত প্রথা বিবেচনা করা হয়।
• ধর্মীয় গ্রন্থ: কিছু দেশে ধর্মীয় গ্রন্থগুলো আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামিক দেশগুলোতে কোরআন ও সুন্নাহ।
• সামাজিক ন্যায়: সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য আইন তৈরি করা হয়।
• আন্তর্জাতিক চুক্তি: কোনো দেশ যখন আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করে, তখন সেই চুক্তির বিধানগুলো দেশটির অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হয়ে যায়।